ঠিকানা: চণ্ডী ঘোষ রোড
কার্যকাল: ১৯৪৯-
প্রথম ছবি: স্বামী (১৯৪৯)
পরিচালক অসিত সেনের সবচেয়ে বেশি ছবি কোন স্টুডিওতে তৈরি হয়েছে বলুন তো? উত্তর হবে ক্যালকাটা মুভিটোন। পঞ্চতপা, জোনাকির আলো, জীবন তৃষ্ণা, দীপ জ্বেলে যাই, স্বরলিপি, আগুন, তৃষ্ণা (নিউ থিয়েটার্সের সঙ্গে যৌথ ভাবে) এই সব ক’টা ছবিই ক্যালকাটা মুভিটোনে তোলা। ১৯৪৬ সালে রেজিস্ট্রেশনের পরে স্টুডিও তৈরি হয়ে কাজ শুরু করতে হয়ে যায় ১৯৪৯ সাল। সাত বিঘা জমি নিয়ে বাগান-পুকুর সমন্বিত মাঝারি আকারের স্টুডিও। ফ্লোর ছিল দু’টি। ইন্দ্রপুরীতে একটি ছাড়া আয়তনে সবচেয়ে বড় ফ্লোর তখন ক্যালকাটা মুভিটোনেই। ম্যানেজিং এজেন্ট বোস ব্রাদার্স। পরিচালকমণ্ডলীতে শ্রীমতি কনক বসু, কানন দেবী, বাণী দত্ত, রবি বসু, প্রকাশ বসু, ক্যাপ্টেন কে কে বসু প্ৰমুখ। শব্দযন্ত্রী বাণী দত্তই চিফ টেকনিশিয়ান হয়ে এলেন নিউ থিয়েটার্স থেকে। নিউ থিয়েটার্সে তাঁর সহকারী হয়ে দু’বছর কাটিয়ে তাঁর সঙ্গেই নতুন স্টুডিওতে এলেন তপন সিংহ। যন্ত্রপাতি সব কিছুই অতি আধুনিক। নতুন মিচেল ক্যামেরা, আর সি এ-র নতুন শব্দযন্ত্র। প্লেব্যাক মেশিনের অভাবে তবু মার খাচ্ছিল স্টুডিও। বাণী দত্ত এঁকে ফেললেন নকশা। মুভিওলা মেশিনকেই বদলে দেওয়া গেল প্লেব্যাকে। নিজে কোনও দিন ছবি প্রযোজনার দিকে যায়নি এই স্টুডিও। প্রযোজকদের ফ্লোর ভাড়া দিয়েই তাদের কর্মকাণ্ড এগিয়েছে বরাবর। ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৫২ সালের জুন পর্যন্ত জনৈক মিঃ মিত্র ছিলেন স্টুডিও সুপারিটেন্ডেন্ট। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে স্টুডিওর গতি রুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তখন শব্দযন্ত্রী লোকেন বসু ও শিক্ষাব্রতী হিমাংশুভূষণ মুখোপাধ্যায় এগিয়ে আসেন দায়িত্ব নিতে। নবগঠিত বোস-মুখার্জি কোম্পানি তত্ত্বাবধায়ক হয়ে স্টুডিও চালাতে থাকে। মালিকানা হাতবদল হয় ফের ১৯৮৫ সালে। এখন নতুন নাম হয়েছে কলকাতা মুভিটোন।
পুনশ্চ
স্টুডিওর পুকুর পাড়ে একটা আম গাছের চারা পুঁতেছিলেন তপন সিংহ। ১৯৫০ সালে পাড়ি দিলেন বিলেতে। ফিরে এসে শুরু হল পরিচালকের জীবন। অনেক বছর পরে হাটে বাজারে ছবির একটা অংশের কাজের জন্য ফিরলেন ক্যালকাটা মুভিটোনে। সকলে দৌড়ে এসে তাঁকে নিয়ে সবার আগে গেলেন সেই পুকুর পাড়ে। সেদিনের ছোট্ট চারা তখন মুকুলে ভরা এক মহীরুহ।