সম্প্রতি আমাদের স্কুলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এক বন্ধুর শেয়ার করা একটি ভিডিও বিশুদ্ধ নস্টালজিয়া জাগিয়ে দিল। প্রবীণ অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের একটি সাক্ষাৎকার, যিনি সকলের চোখে আভিজাত্য এবং মাধুর্যের প্রতীক। আমাদের স্কুল, লোরেটো কনভেন্ট আসানসোলের প্রাক্তন ছাত্রী হিসেবে আমাদের কাছে তিনি আরওই স্পেশাল।
শৈশবের কোনও ‘ক্রাশ’ ছিল? জিজ্ঞাসা করা হলে ওই ভিডিওতে তিনি অকপটে উত্তর দিয়েছেন, ‘‘হ্যাঁ, একটি ছিল।’’ তিনি বলে চলেন, লোরেটো স্কুলের পাশে সেন্ট প্যাট্রিক স্কুলে উল্ফগ্যাং লাহমেয়ার নামের একটি জার্মান ছাত্রের কথা। লম্বা, সুদর্শন, নীল চোখ। সাধারণত স্কুলের গেটের কাছে দৃষ্টি বিনিময় এবং স্কুলের সোশ্যালে দেখা করার সুযোগই ছিল একমাত্র আদানপ্রদানের সুযোগ। কয়েক মাস পরে ছেলেটি জার্মানিতে ফিরে যায়।
আমাদের কাছেও দু’টি স্কুলের এই সাধারণ গেটটি একটি ল্যান্ডমার্ক, যেখানে ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে অনেক মধুর স্মৃতি তৈরি হয়েছিল। শর্মিলার ব্যাচের অন্যরা এ গল্পের বাকি অংশটাও শেয়ার করেছেন। উল্ফগ্যাং-এর অন্তত একজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল, যার নাম টুবলু দত্ত। দু’জনের মধ্যে এ নিয়ে বেশ মারামারি হয়েছিল এবং উল্ফগ্যাং টুবলুকে শর্মিলার কাছ থেকে দূরে থাকতে বলেছিল। শেষ পর্যন্ত দু’জনের মারামারি থামাতে স্কুলের অধ্যক্ষকে হস্তক্ষেপ করতে হয় এবং টুবলু দার্জিলিং-এর অন্য স্কুলে চলে যায়।
শর্মিলা এবং উল্ফগ্যাং দু’জনেই বার্নপুর সংলগ্ন শহরে থাকতেন। বার্নপুরে একটি সুন্দর পার্ক আছে। উল্ফগ্যাং-এর বাবার নামে নামাঙ্কিত সেই লাহমেয়ার পার্ক বর্তমানে নেহেরু পার্ক হয়েছে। লাহমেয়ার ব্যক্তিগত ভাবে পার্কটির ভিতরকার ভবনের নকশা ও নির্মাণের তদারকি করেছিলেন। ইসকো প্ল্যান্টের জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন লাহমেয়ার এবং ঘটনাচক্রে ইসকো-তে তিনি আমার বাবার রিপোর্টিং অথরিটি ছিলেন।
ইন্টারভিউ লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/watch/?v=920477850116921
ড. শুভ্রা বিশ্বাস
কালিকাপুর, কলকাতা