ঠিকানা: বরানগর
কার্যকাল: ১৯৪৭-১৯৫২
প্রথম ছবি: চোরাবালি (১৯৪৭)
বেঙ্গল ন্যাশনাল স্টুডিওর কর্ণধার এস ডি নারাং ছিলেন লাহোরের মানুষ। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। সাফল্যের সঙ্গে ডাক্তারি পাশ করে চিকিৎসাশাস্ত্রের গবেষণায় ডক্টরেট উপাধি পান। কিন্তু তাঁকে সিনেমার পোকায় কামড়াল। লাহোরের বিখ্যাত পাঞ্চোলি স্টুডিওতে তৈরি হিন্দি ছবির প্রথম সুবর্ণজয়ন্তী হিট খাজাঞ্চির (১৯৪১) নায়ক হলেন নারাং। পরপর বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করার পরে চিত্রনির্মাণের দিকে ঝোঁক গেল। লাহোরে তিনি গড়ে তুললেন আপার ইন্ডিয়া স্টুডিও। কিন্তু অচিরেই তাঁর স্বপ্ন ছারখার করে দিল দেশভাগের প্রস্তুতি। নারাংকে চলে আসতে হল এ পারে। এ বার তাঁর কর্মক্ষেত্র হল কলকাতা। অফিস খুললেন চৌরঙ্গীর লেসলি হাউসে। বরানগরে অচল হয়ে পড়ে থাকা দেবদত্ত স্টুডিও লিজ নিয়ে খুললেন বেঙ্গল ন্যাশনাল স্টুডিও। ১৯৪৬ সালের শেষ দিকে এখানে কাজ শুরু হয়। বাংলার পাশাপাশি হিন্দি ছবিও হয়েছে। এক আউরত (১৯৪৮), লটারি (১৯৪৯), নয়ি ভাবী (১৯৫০) তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। বেঙ্গল ন্যাশনালে তৈরি বাংলা ছবির মধ্যে আজও স্মরণীয় হয়ে আছে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন (১৯৪৯)। অনেক আশা নিয়ে এসেও কলকাতায় কিন্তু বেশি দিন থাকতে পারলেন না নারাং। বহু লোকই প্রতারণা করল তাঁকে। বড় রকম আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়লেন। শেষ পর্যন্ত কলকাতার পাট চুকিয়ে বম্বে চলে গেলেন। ইহুদি কি লড়কি (১৯৫৭, অভি. মধুবালা, প্রদীপ কুমার), দিল্লি কা ঠগ (১৯৫৮, অভি. কিশোর কুমার, নূতন), সেহনাই (১৯৬৪, অভি. বিশ্বজিৎ), কলেজ গার্ল (১৯৭৮, অভি. শচীন, সুর বাপ্পী লাহিড়ী)-এর মতো ছবি বম্বেতে নারাংয়েরই প্রযোজনা। বেঙ্গল ন্যাশনাল স্টুডিওর পথ খুব অল্প দিনেই রুদ্ধ হয়ে গেল। স্টুডিওর জমি পরে ঢুকে গিয়েছে বরানগর আইএসআই ক্যাম্পাসের মধ্যে (দ্র দেবদত্ত স্টুডিও)।
পুনশ্চ
কলকাতায় স্টুডিও ব্যবসার অভিজ্ঞতা খুব ভাল না হলেও নিজের জীবনসঙ্গিনীকে নারাং
খুঁজে পেয়েছিলেন কলকাতাতেই। অভিনেত্রী স্মৃতিরেখা বিশ্বাস। বেঙ্গল ন্যাশনাল-এর ছবি চীনের পুতুল-এর
নায়িকা। বাংলা, হিন্দি মিলিয়ে করেছেন আরও
অনেক ছবি। নারাংই তাঁকে বম্বে নিয়ে যান। ১৯৬০ সালে বিয়ে করেন ওঁরা।