ঠিকানা: ঝাউতলা
কার্যকাল: ১৯৪৮-১৯৫১
প্রথম ছবি: দিগভ্রান্ত (১৯৫০)
ছায়াঘেরা ঝাউতলা! বাগান-পুকুর নিয়ে এখানেই ছিল রূপশ্রী স্টুডিওর কর্মকাণ্ড। চারপাশে সবুজের ছড়াছড়ি। ঘাট বাঁধানো পদ্মের পুকুর। কেয়ারি করা ফুলের বাগান। সৌন্দর্যের জন্য বিশেষ খ্যাতি ছিল রূপশ্রীর। রূপশ্রী লিমিটেড নামটি প্রথম পরিচিতি পায় 'সহধর্মিণী' (১৯৪৩) ছবির সুবাদে। পরিচালক ছিলেন নীরেন লাহিড়ী। রূপশ্রীর পরের ছবি দম্পতি-ও (১৯৪৩) তাঁর। দু’টি ছবিই হিট। সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে পরপর আসতে লাগল 'নন্দিতা' (১৯৪৪), 'মৌচাকে ঢিল' (১৯৪৬), 'শাঁখা সিঁদুর' (১৯৪৮) ও 'রূপান্তর' (১৯৫১)। ছবির জগতে জায়গা মজবুত করে ফেলল রূপশ্রী। এ বার পালা নিজস্ব স্টুডিও নির্মাণের। রূপশ্রীর কর্ণধার ডাঃ এস এন সিন্হা ও কেশব দত্ত ঝাউতলায় স্টুডিও বাড়ির ভিত্তি স্থাপনা করলেন ১৯৪৫ সালে। বেশ এগোচ্ছিল নির্মাণের কাজ। থমকে যেতে হল পারিপার্শ্বের চাপে। ১৯৪৬-৪৭ এর অশান্ত কলকাতা। ঝাউতলা এলাকায় তখন স্বাভাবিক গতিবিধি রুদ্ধ। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পরে '৪৮ সালের নভেম্বর মাসে দ্বারোদঘাটন হল রূপশ্রী চিত্র নির্মাণশালার— নিজেদের ছবি অবশ্য কমে এসেছে তখন। ভাড়াটিয়া প্রতিষ্ঠানের ছবিই উঠতে শুরু করল। কিন্তু বিধি ফের বাম। ১৯৫১ সালের ১৪ই মে রাতে আগুনে খাক হয়ে গেল রূপশ্রীর রূপ। কেশব দত্ত চেষ্টা করেছিলেন অনেক। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি আর। ১৯৫৬ সালে ওই জায়গাতেই উঠে এল ডালহৌসি ইনস্টিটিউট ক্লাব। রূপশ্রীতে তৈরি যে বিখ্যাত ছবি আজও সকলে দেখতে পান, সেটি কানন দেবী অভিনীত ‘মেজদিদি’।
পুনশ্চ
তরুণ মজুমদার একেবারে প্রথম জীবনে ফিল্মের কাজ শেখার আশায় হাজির হয়েছিলেন রূপশ্রী স্টুডিওয়। মালিক কেশব দত্তকে বলে শিক্ষানবিশ ক্যামেরা সহকারী হওয়ার অনুমতি পান। ওখানে ক্যামেরাম্যান তখন সন্তোষ গুহরায়। অর্ধেন্দু মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় সংকেত ছবির শুটিং চলছিল তখন। কিন্তু ইউনিয়নের কার্ড না থাকায় বেশিদিন ওখানে থাকা তরুণবাবুর পক্ষে সম্ভব হয়নি। কিন্তু চোখের সামনে শুটিং আর ফিল্ম ক্যামেরা দেখার প্রথম অভিজ্ঞতা ওঁর রূপশ্রীতেই।