স্টুডিও বিবরণ

প্রথম পাতা > স্টুডিও বিবরণ
ইন্ডিয়ান কিনেমা আর্টস

ইন্ডিয়ান কিনেমা আর্টস


ঠিকানা: ৮ বাগমারি রোড

কার্যকাল: ১৯২৬-১৯৩২

প্রথম ছবি: শঙ্করাচার্য (১৯২৭)

ঘনশ্যাম দাস চোখানি, কালীপ্রসাদ ঘোষ এবং ধীরেন গঙ্গোপাধ্যায় (ডিজি) মিলে গড়ে তোলেন এই স্টুডিও-ল্যাবরেটরি। বাগমারিতে জনৈক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাগানবাড়ি লিজ নিয়েই হল স্টুডিও।

১৯২৬ সালেই চোখানি ইন্ডিয়ান কিনেমা আর্টস নাম দিয়ে একটা কোম্পানি খুলেছিলেন। ম্যানেজার বি ডি রাভাল। অফিস ছিল ধর্মতলায়। প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর নিশির ডাক গল্প থেকে পুনর্জন্ম ছবি করার জন্য পরিচালক জয়গোপাল পিল্লেকে টাকা দেন তিনি। ওটাই চোখানির প্রথম প্রযোজনা। স্টুডিও তখনও হয়নি। পিল্লের ছবি শুটিং হচ্ছিল রাজস্থানে। ইতিমধ্যে মিনার্ভায় আত্মদর্শন নাটক দেখে চোখানির নজর পড়ল পরিচালক কালীপ্রসাদ ঘোষের উপরে। কালীপ্রসাদকে সিনেমায় টেনে আনতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন তিনি। ইচ্ছে ছিল বঙ্কিমের কপালকুণ্ডলা চিত্রনাট্য লেখাবেন। কিন্তু বঙ্কিমের যাবতীয় স্বত্ব ছোঁ মেরে নিয়ে গেল ম্যাডান কোম্পানি। অগত্যা কেনা হল গিরিশচন্দ্রের শঙ্করাচার্য। কালীপ্রসাদ কলম ধরলেন। ভাবা হয়েছিল পিল্লেই পরিচালনা করবেন। কিন্তু তিনি ধর্মীয় কাহিনিতে উৎসাহ দেখালেন না। ফলে কালীপ্রসাদের উপরে পরিচালনার দায়িত্বও পড়ল। কালীপ্রসাদই খুঁজে বার করলেন বাগমারির বাগানবাড়ি। সেখানে স্টুডিওর পত্তন হল। কালীপ্রসাদকে সাহায্য করতে এলেন ডিজি।

বাগমারি স্টুডিও আর শঙ্করাচার্য ছবির জন্য ডিজি খুব পরিশ্রম করেছিলেন।  অভিনয়ও করেছিলেন। তবে তার জন্য যথোপযুক্ত কৃতিত্ব তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে মনে করে এই ছবির পর বাগমারি স্টুডিয়োর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন তিনি। শঙ্করাচার্যই মুক্তি পায় আগে। তার পর পুনর্জন্ম (পরি, জয়গোপাল পিল্লে ১৯২৭)। ভাগ্যলক্ষ্মী (১৯৩২) ছবি করার পরে বাগমারি স্টুডিও ছেড়ে দেন কালীপ্রসাদও। টকি মেশিন না আনলে বাজারে টেঁকা মুশকিল হবে, বুঝতে পারছিলেন তিনি। ইন্ডিয়ান কিনেমা আর্টসকে সেই উদ্দেশ্যে লিমিটেড কোম্পানি করার উদ্যোগও হয়। কিন্তু চোখানি শেষ পর্যন্ত অংশীদার নিতে রাজি হননি। নিজেও টাকার জোগাড় করতে পারেননি। ফলে সবাক যুগে পিছু হটতেই হল। কালীপ্রসাদ চলে যাওয়ার পরে নিরঞ্জন আর চারু রায়কে দিয়ে ছবি করাতে নেমেছিলেন চোখানি। লাভ হয়নি তেমন। বাগমারি স্টুডিও একটা সময় ম্যাডানের সঙ্গে টক্কর দিয়েও দৌড় থেকে ছিটকে গেল।

নির্বাচিত বাংলা চিত্রপঞ্জী
শঙ্করাচার্য (১৯২৭), নিষিদ্ধ ফল (১৯২৮), অপহৃতা (১৯২৯), কণ্ঠহার (১৯৩০), পরদেশিয়া (১৯৩১), ভাগ্যলক্ষ্মী (১৯৩২) এবং পরশমণি (১৯৩২, মুক্তি পায়নি)।

পুনশ্চ

বাংলা ছায়াছবির ভবিষ্যৎ মহারথীদের বেশ কয়েক জনের আত্মপ্রকাশ এই চিত্র প্রতিষ্ঠানে। যেমন নির্মলেন্দু লাহিড়ি, নিভাননী দেবী ও জীবন গঙ্গোপাধ্যায় (শঙ্করাচার্য), নীতিন বসু (পুনর্জন্ম), ভূমেন রায় (অপহৃতা)।

আরও ছবি