ছবি বিশ্বাসের সিন্দুক

প্রথম পাতা > ছবি বিশ্বাসের সিন্দুক

স্বর্ণযুগের বাংলা ছবিতে সম্ভ্রান্ত, অভিজাত চেহারা বলতেই সবার আগে যাঁর নাম মনে পড়ে তিনি ছবি বিশ্বাস।  সেই ব্যারিটোন গলা, সেই জাঁকালো উপস্থিতি। সত্যজিৎ রায় বলতেন, জলসাঘর, দেবী আর কাঞ্চনজঙ্ঘার চিত্রনাট্য ছবি বিশ্বাসকে ভেবেই লেখা। আবার সেই তিনিই স্নেহময় কাবুলিওয়ালা, দুনিয়ার মিনিরা যাঁকে ভারী ভালবাসে।  ১৯৬২ সালের ১১ জুন জাগুলিয়ার বাড়ি থেকে ফেরার সময় এক মারাত্মক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ছবিবাবু।  জীবনের শেষ ১৫টা বছর তিনি কাটিয়েছিলেন বাঁশদ্রোণীর এক ভাড়াবাড়িতে।  সেই লাল ইটের বাড়ি আজ আর নেই। তাঁর দুই পুত্র দিলীপ আর মলয় এবং কন্যা মঞ্জুলাও প্রয়াত।  ওখানে এখন যে ফ্ল্যাটবাড়ি উঠেছে, সেখানেই একটি ফ্ল্যাটে থাকেন পৌত্র সুজয় বিশ্বাস।  একতলায় একটি ক্যাফে চালান তিনি। ওঁদের বসার ঘরে সস্ত্রীক ছবিবাবুর একটা বড় ছবি আজও দেয়ালে টাঙানো। সুজয় দাদুকে দেখেননি। কিন্তু পারিবারিক ভাবে নানা গল্প শুনে বড় হয়েছেন। যেমন, গোয়াবাগানে মামার বাড়িতে থাকতেই স্থানীয় ক্লাবগুলোতে নিয়মিত অভিনয় করতেন ছবি বিশ্বাস। প্রেসিডেন্সি কলেজ ছেড়ে বিদ্যাসাগর কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন শুধুমাত্র শিশির ভাদুড়ীর কাছাকাছি আসবেন বলে।  অভিনয়ের পাশাপাশি নানা ধরনের শিল্পকর্মে ঝোঁক ছিল ছবিবাবুর। মাটির কাজ, ছবি আঁকা, বাগান করা...আরও কত কী! সুজয়ের বাবা-মায়ের বিয়েতে সারা রাত জেগে তত্ত্ব সাজিয়েছিলেন। তাঁর হাতের কাজ এখনও কিছু কিছু রয়ে গেছে ওঁদের কাছে। সেই সঙ্গে সুজয়ের স্ত্রী সীমা আগলে রেখেছেন কিছু পুরনো ছবি। সেই অ্যালবামই ওঁরা ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন  বিএফএ-কে।  বিশ্বাস পরিবারকে আমাদের তরফে অশেষ ধন্যবাদ।

লেখা: শাওলি মুখোপাধ্যায়