ঠিকানা: ১৯ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড, কলকাতা ৪৫
শুভারম্ভ: ১২.২.১৯৭১
প্রদর্শিত প্রথম ছবি: খামোশি
এখন: চলছে
নবীনা সিনেমা প্রতিষ্ঠা করেন জগদীশ চৌখানি। তাঁর বাবা বাবুলাল চৌখানি গড়ে তুলেছিলেন ভারতলক্ষ্মী স্টুডিও। সেই জমিরই একটি অংশে গড়ে ওঠে ১১০৩ আসনের জগদীশের বড় মেয়ের নামে নতুন হল নবীনা। স্টুডিও সে সময় বন্ধ। নবীনার সামনে একটি বিশাল কম্পাউন্ড ছিল, যা পরে রাস্তা চওড়া করার জন্য সরকার নিয়ে নেয়। হিন্দি ছবিই দেখাত তখন নবীনা। দিওয়ার (১৯৭৬), ত্রিশূল (১৯৭৮), ডন (১৯৭৮), মুকাদ্দর কা সিকন্দর (১৯৭৮) এখানে খুব ভাল চলে। মধুবন আর মালঞ্চও ছিল অবশ্য। তাই নবীনা হিন্দির পাশাপাশি হলিউডও দেখানো শুরু করে। জস (১৯৭৫) হল প্রথম বড় হলিউড ছবি, যা এখানে মুক্তি পায়। দ্য স্পাই হু লাভড মি (১৯৭৮) একই সঙ্গে মধ্য কলকাতার হলগুলোতে এবং নবীনায় মুক্তি পায়। এই ধারা ১৯৯২ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ইতিমধ্যে ১৯৮৮ সালে জগদীশের ছেলে নবীণ ব্যবসায় যোগ দিয়েছেন। তাঁর সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ। কারণ তত দিনে হলিউডের সিনেমা আমদানির রেশনিং চালু হয়েছে। আমদানিকৃত প্রিন্টের সংখ্যার উপরও বিধিনিষেধ ছিল। চলচ্চিত্র রপ্তানির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল অনাবাসী ভারতীয়দের। কিন্তু হলিউডের ভালো স্টুডিওতে তাদের খুব কমই নাগাল ছিল। ফলে আসতে থাকল সফট পর্ন এনআরআই ছবি। নবীনার দর্শকের চরিত্র গেল বদলিয়ে। ১৯৯২ সাল থেকে তাই সলমন খানের এক লড়কা এক লড়কি দিয়ে নবীনা আবার হিন্দি ছবিতে ফিরল। ১৯৯৩ সালে খলনায়কের জন্য বুকিং শুরুর আগের রাত থেকে সঞ্জয় দত্তের ভক্তরা লাইন দিয়েছিলেন। একি দৃশ্য দেখা গেল দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গের (১৯৯৫) জন্য। ১৯৯৫ সালেই যখন করণ অর্জুন মুক্তি পেল, সলমন ও শাহরুখ খানের দুটি ফ্যান ক্লাব প্রেক্ষাগৃহের সামনে জড়ো হয়ে হাতাহাতি, বোমাবাজি অবধি করল। এর সঙ্গেই টাইটানিক (১৯৯৭), জুরাসিক পার্ক (২০১২) এর মতো ছবিও কিন্তু নবীনা দেখিয়েছে। এর পরের বড় বদল এল ২০০৫ সালে, ঋতুপর্ণ ঘোষের বাংলা ছবি অন্তরমহলের প্রদর্শনের মাধ্যমে। ভেঙ্কটেশ ফিল্মস তাদের ছবি এর পর থেকে নিয়মিত নবীনাতে দেখাতে থাকে। অতএব বর্তমানে ৮২১ আসনের নবীনা হিন্দি, বাংলা ও ইংরেজি সব ছবিই দেখায়।
পুনশ্চ
মুকাদ্দর কা সিকন্দর-এর সময় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে জগদীশ মজার কাজ করেছিলেন। পিতা বাবুলাল যেহেতু চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং স্টুডিও মালিক ছিলেন, সিনেমার পোশাক ছিল হাতের নাগালে। একটি খেলনা বন্দুক নিয়ে বাবুলাল পুলিশের পোশাক পরে থিয়েটার থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন এবং জনতা শান্ত না হলে গুলি করার হুমকি দিয়েছিলেন।