ঠিকানা: ৫ জহরলাল নেহরু রোড। কলকাতা ৭২
এখন: মাল্টিপ্লেক্স, সঙ্গে রিটেল চেন
হলিউডের বিখ্যাত প্রযোজন সংস্থা মেট্রো গোল্ডউইন মেয়ারের তৈরি প্রেক্ষাগৃহ। স্থপতি ছিলেন টমাস ডব্লিউ ল্যাম্ব। বম্বের মেট্রো সিনেমাও ওঁরই বানানো। ১৯৩৫ সালের ডিসেম্বর মাসে লরেল-হার্ডির ছবি বনি স্কটল্যান্ড দেখিয়ে পথ চলা শুরু করে কলকাতার মেট্রো। গন উইথ দ্য উইন্ড, বেন হুর, কুয়ো ভাদিস, আইভ্যানহো-র মতো ব্লকবাস্টার এখানে দেখানো হয়েছে। উত্তমকুমারের বাবা সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায় এই প্রেক্ষাগৃহে অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। প্রথম যে বাংলা ছবি এই হলে দেখানো হয়, সেটি চিত্রাঙ্গদা (১৯৫৫)। প্রেক্ষাগ়ৃহের সঙ্গেই এখানে ১৬ মিমি ফিল্মের একটি লাইব্রেরি ছিল। সেখান থেকে ফিল্ম ধার নেওয়া যেত। সত্যজিৎ রায় প্রায়ই এই লাইব্রেরি ব্যবহার করতেন।১৯৭৩ সালে হিন্দি ছবি ববি এই হলে চলেছিল ৫২ সপ্তাহ ধরে। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর প্রথম ছবি দূরত্ব ২০ মার্চ ১৯৮১ সালে এই হলে মুক্তি পায়। বুদ্ধদেব পরে আনোয়র কা আজব কিসসা ছবির একটি দৃশ্য নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকিকে নিয়ে এই হলে শুটও করেন। মেট্রো কলকাতার শুধু একটি সিনেমা হল নয়, শহরের একটি অভিজ্ঞান যেন বা। ধর্মতলার ওই এলাকাটা চেনাতে লোকে মেট্রো সিনেমা হলকে উল্লেখ করে। মেট্রো গলি বিকিকিনির জন্য বিখ্যাত। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের জন্য বেছে নেওয়া চত্বরটা মেট্রো চ্যানেল বলে পরিচিত। প্রিয়ঙ্কা চোপড়া-রণবীর সিংহ-অর্জুন কাপুর অভিনীত হিন্দি ছবি গুন্ডে-র সংলাপে এই মেট্রো হলের কথা আছে। ধর্মতলার একের পর এক সিঙ্গল স্ক্রিন বন্ধ হয়েছে। মেট্রোও এখন শপিং মল। কিন্তু সঙ্গে মাল্টিপ্লেক্সও বটে। ভিতরটা অন্য রকম হয়ে গেলেও বাইরের দিকে পুরনো কাঠামোর আদল অনেকটা বাঁচিয়ে রাখা গিয়েছে। হাজার হোক, মেট্রো বলে কথা!
পুনশ্চ
মেট্রো সিনেমা হল হওয়ার আগে ওই ঠিকানাতেই ছিল দ্য স্টেটসম্যান কাগজের পুরনো অফিস। ১৯৩২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সেই অফিস উঠে যায় বর্তমান ঠিকানা, অর্থাৎ ৪ চৌরঙ্গী স্কোয়ারে। তার পর পুরনো বাড়িটি ভেঙে গড়ে তোলা হয় মেট্রো।
উল্লেখযোগ্য ছবি (১৯১৭-১৯৯৯)
পথ বিপথ