ঠিকানা: ২ ইন্দ্র রায় রোড, কলকাতা ২৫
শুভারম্ভ: ৮.৭.১৯৪৮
প্রদর্শিত প্রথম ছবি: সাধারণ মেয়ে
এখন: চলছে
আর্টস পিকচার্স লিমিটেড ভবানীপুরে ৮২৪টি আসন নিয়ে একটি সিনেমা হল স্থাপন করে এবং নাম দেয় ইন্দিরা। ভবনের বাইরের নকশা করার দায়িত্বে ছিলেন এম কে ঘোষ। অভ্যন্তরীণ সজ্জা খগেন রায় করেছিলেন। এটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ছিল। আর্টস পিকচার্স লিমিটেডের প্রথম পরিচালক অবনীচন্দ্র বসু এর উদ্বোধন করেন। আর ডি বনসল আশির দশকের শুরুর দিকে এই হলের মালিকানা পান। বর্তমান মালিক রাজেন্দ্র বাগারিয়া দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১৯৯৮ সালে। তিনিই এখন আর্টস পিকচার্স প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক। হিন্দি ছবি তো বটেই, রাজেন্দ্র বেশ কিছু বাংলা ছবিও দেখিয়েছেন এই হলে। পরান যায় জ্বলিয়া রে (২০০৯) এবং চ্যালেঞ্জ (২০০৯) এখানে ভাল ব্যবসা করেছে। তবে ইদানীং বাংলা ছবি তেমন একটা ভিড় টানতে পারেনি। লকডাউনের আগে এখানে কয়েকটি গুজরাটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। ২০২১-এর ১১ অগস্ট রাধে ছবি দিয়ে হল আবার চালু হয়৷ তার পরে বেশ কিছু পুরনো ছবির পুনঃ প্রদর্শন হয়েছে এখানে। সন্ধে এবং রাতের শোয়ে নতুন পাঞ্জাবি সিনেমাও দেখানো শুরু হয়। যেহেতু ভবানীপুরে প্রচুর পাঞ্জাবি পরিবার রয়েছে, তাঁরা অনেকেই ভিড় করেছেন এখানে। কখনও কখনও ছবি শুরুর আধ ঘণ্টা আগে বোঝা গিয়েছে, এখানকার একেকটা শো পাঞ্জাবি সম্প্রদায়ের ইভেন্টে পরিণত হয়েছে। উত্তমকুমারের সব ছবিই ইন্দিরাতে খুব ভাল চলত। নায়ক ছবির প্রিমিয়ারও এখানেই হয়। কিন্তু উত্তম এলে জনতা বিশৃঙ্খল হয়ে উঠবে, এমন ভয় ছিল। সত্যজিৎ রায় তবু বলেন: উত্তম, ভুলে যেও না এটা সত্যজিৎ রায়ের ছবি। তুমি এসো। উত্তম আসেন এবং যথারীতি হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। উত্তমকেই তখন হাত তুলে জনতাকে শান্ত করে বলতে হয়, আমি অনুরোধ করছি, দয়া করে চুপ করে ছবিটি দেখুন। ভুলে যাবেন না এটা সত্যজিৎ রায়ের ছবি।
পুনশ্চ
রাজেন্দ্র বাগারিয়ার বাবা মোহনলালের একটি পরিবেশনা সংস্থা ছিল। মোহন পিকচার্স। তিনি মূলত পুরনো হিন্দি ছবি দেখাতেন। ১৯৮৫ সালে মারা যান। তাঁর কাছে প্রায় ৩০০ লবি কার্ড আর ফটোগ্রাফ ছিল। ইন্দিরা সেই বিরল প্রেক্ষাগৃহের মধ্যে একটি, যার দোতলায় সেই সব পুরনো লবি কার্ড, বুকলেট ইত্যাদি সাজানো আছে। আন (১৯৫২), মুঘল ই আজম (১৯৬০), গঙ্গা যমুনার (১৯৬১) মতো বিখ্যাত ছবিও তার মধ্যে আছে।
উল্লেখযোগ্য ছবি (১৯১৭-১৯৯৯)
মানময়ী গার্লস স্কুল (১৯৫৮), বিচারক (১৯৫৯), নির্ধারিত শিল্পীর অনুপস্থিতিতে (১৯৫৯), সোনার হরিণ (১৯৫৯), মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০), পুনশ্চ (১৯৬১), স্বরলিপি (১৯৬১), অভিযান (১৯৬২), অতল জলের আহবান (১৯৬২), মহানগর (১৯৬৩), সাত পাকে বাঁধা (১৯৬৩), চারুলতা (১৯৬৪), নায়ক (১৯৬৬), বালিকা বধূ (১৯৬৭), নিম অন্নপূর্ণা (১৯৮৩), ফটিকচাঁদ (১৯৮৩), যোদ্ধা (১৯৯৭)