ঠিকানা: ১৩৬ এস এন ব্যানার্জি রোড, কলকাতা ১৩
শুভারম্ভ: ২.৮.১৯৪০. এলিট নামে উদ্বোধন ২৪.১১.১৯৪৮
প্রদর্শিত প্রথম ছবি: দি আনকংকার্ড (এলিট)
এখন: বন্ধ
আগের নাম : ম্যাডান থিয়েটার অ্যান্ড প্যালেস অফ ভ্যারাইটিজ, প্রভাত
এলিট সিনেমা হল একেবারে গোড়ায় ম্যাডান থিয়েটার অ্যান্ড প্যালেস অফ ভ্যারাইটিজ নামে পরিচিত ছিল। এটা তৈরি হয়েছিল বলনাচের মঞ্চ হিসাবে। খুবই শৌখিন ব্যাপার ছিল সেটা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা তো ছিলই। নাচের জন্য ছিল বরফের মঞ্চ। বরফ জমা করার ঘর তৈরি থাকত শূন্যাঙ্কের নীচের তাপমাত্রায়। নির্বাক যুগে ছবির সঙ্গে বাজানো হত পিয়ানো। প্রোজেক্টর আনা হয়েছিল ইটালি থেকে। প্যালেস অফ ভ্যারাইটিজের নাম বদল হয়ে প্রভাত হল ১৯৩৮ সালে। ২৮ এপ্রিল হিন্দি ছবি জায়গিরদার দিয়ে শুরু হল প্রভাত। এলিট নাম হল আরও দশ বছর পর। এ বার হল খুলল ইরেজি ছবি আনকংকার্ড দিয়ে। মালিকানাও বদল হয়ে ম্যাডানদের হাত থেকে এম্পায়ার এস্টেটের হাতে এল। গন উইথ দ্য উইন্ড (১৯৩৯), টেন কমান্ডমেন্টস (১৯৫৬), দ্য গানস অফ নাভারোন (১৯৬১), মাই ফেয়ার লেডি (১৯৬৪), সাউন্ড অফ মিউজিক (১৯৬৫), ম্যাকেনা’স গোল্ড (১৯৬৯), হোয়্যার ঈগলস ডেয়ার (১৯৬৮), দ্য গডফাদার (১৯৭২) হলিউডের বাঘা বাঘা ছবি দেখিয়েছে এলিট। হিন্দি ছবিও পিছিয়ে থাকেনি। মুঘল ই আজম (১৯৬০) এত ভাল ব্যবসা পায় এখানে যে হলকর্মীরা সবাই বোনাস পেয়েছিলেন। হরে রাম হরে কৃষ্ণর (১৯৭২) প্রিমিয়ারে ছুটে এসেছিলেন দেব আনন্দ। শোলে (১৯৭৫) মুক্তির সময় এসেছিলেন সঞ্জীব কুমার এবং অমিতাভ বচ্চন। ৩৬ চৌরঙ্গী লেন (১৯৮১) প্রিমিয়ারে ছিলেন সত্যজিৎ রায়। ১৯৮৯ সালে ম্যায়নে পেয়র কিয়ার সময় এলেন ভাগ্যশ্রী। শাহরুখ খান, জুহি চাওলা আর অনুপম খের ঘুরে গেলেন ডর-এর (১৯৯৩) সময়। বচ্চনের শাহেনশা যখন এল (১৯৮৮), টিকিটের লাইন চলে গিয়েছিল ময়দান অবধি। হম দিল দে চুকে সনম (১৯৯৯), রব নে বনা দি জোড়ি খুব ভাল ব্যবসা করেছে এখানে। কিন্তু পরের দিকে ক্রমশ দর্শক কমতে লাগল। ২০১৮-র মে মাসের শেষ সপ্তাহে নাইট শো খোলার মতো লোক থাকত না। পরপর তিনটে ছবি চ্যালেঞ্জ হ্যায় কেয়া দম (১১ মে), টারজান (১৮ মে) আর পরমাণু দ্য স্টোরি অফ পোখরান (২৫ মে) আয় করল মাত্র ১৮, ২৩ আর ১৮ হাজার টাকা। ১২২৮ আসনের হল খাঁ খাঁ করছে। ৩১ মে নাইট শো হল না। কারণ একটা লোকও নেই। পয়লা জুন থেকে বন্ধ হয়ে গেল এলিট। ২০২১-র জুনে এখানে স্থানীয় হকারদের কোভিড টীকাকরণ কেন্দ্র হয়েছিল।
পুনশ্চ
১৯৩১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে এখানে দু'দিনের জন্য গীতোৎসব হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের শিশুতীর্থ সেখানে মঞ্চস্থ হয়। ১৯৩৩ সালে এখানেই রবীন্দ্রনাথ তাসের দেশ-এর শো করেন।
উল্লেখযোগ্য ছবি (১৯১৭-১৯৯৯)
পলাতকা, শিকার, পদাতিক, একদিন সূর্য, এক যে ছিল রাজকুমারী (ডাব্ড), মহারুদ্র (ডাব্ড), সময় অসময় দুঃসময়