ঠিকানা: ৮৪, বিধান সরণি, কলকাতা ৪
শুভারম্ভ: ১০।৬।১৯৫৪
প্রদর্শিত প্রথম ছবি: লেডিজ সিট
এখন: বন্ধ
বারিকরা কলকাতায় আসার আগে বাঁকুড়ার বাসিন্দা ছিলেন। পরিবারের ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন কালিপদ বারিক। তিনি ৩২ বছর বয়সে মারা যান। তাঁর স্ত্রী ছিলেন শৈলবালা দেবী। তাঁদের তিন পুত্র, শম্ভুনাথ বারিক, সরোজেন্দ্রনাথ বারিক এবং শচীন্দ্রনাথ বারিক। সেই দিনগুলিতে নবদম্পতিদের সিনেমা দেখতে যাওয়ার একটি ঐতিহ্য ছিল। শচীন্দ্রনাথ একবার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সিনেমা দেখতে গিয়ে টিকিট পেলেন না। বিরক্ত হয়ে শৈলবালা বললেন যে, হাতিবাগান এলাকায় একটি সিনেমা হল নির্মাণ করা হবে। ছায়া সিনেমা ওঁরা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আগেই। এ বার বারিক স্ক্রিন কর্পোরেশন ১৯৫৪ সালে লেডিজ সিট ছবি নিয়ে বিধান সরণিতে দর্পণা সিনেমা হল খুলল। উদ্বোধনের পর সরোজেন্দ্রনাথের তৃতীয় কন্যার জন্ম হয় এবং তারও নাম রাখা হয় দর্পণা। সরোজেন্দ্রনাথ প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র ছিলেন। তিনি সার্জন হতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাঁর মা এর বিপক্ষে ছিলেন। তাই তাঁকে ব্যবসাই দেখাশোনা করতে হয়েছে। কিন্তু সরোজেন্দ্রনাথ অত্যন্ত শৈল্পিক মনের মানুষ ছিলেন। দর্পণার কাচের দেয়ালের নকশা তিনিই করেছিলেন। দর্পণা উদ্বোধনের আগে চিত্রা হলের সামনে লেডিজ সিটের ব্যানার লাগানো হয়। সরোজেন্দ্রনাথ চিত্রার মালিকদের বলেছিলেন যে, এই ছবি দিয়ে দর্পণা শুরু হবে। চিত্রার মালিক মিত্ররা সাগ্রহে ব্যানারটি থাকতে দিয়েছিলেন এবং তারিখটিও উল্লেখ করা ছিল যে কবে থেকে দর্পণায় ছবিটি চলবে। দর্পণা-প্রাচী-পূর্ণ বা দর্পণা-প্রাচী-ইন্দিরা বেশ গুরুত্বপূর্ণ চেন ছিল। রাজ কাপুরের ছবিও দর্পণায় মুক্তি পেত। সরোজেন্দ্রনাথের সঙ্গে রাজের খুব ভাল সম্পর্ক ছিল। রাজ, নিরূপা রায়, নার্গিস সবাই এসেছেন দর্পণায়। ২০১৯-এর ১৬ মার্চ হলটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে, এটি আইনি সমস্যায় জর্জরিত।
পুনশ্চ
শম্ভুনাথ, সরোজেন্দ্রনাথ এবং শচীন্দ্রনাথ বারিক মিলে একটি প্রযোজনা সংস্থাও খুলেছিলেন। বারিক স্ক্রিন কর্পোরেশনই ১৯৫৭ সালে উত্তম-সুচিত্রা জুটির বিখ্যাত ছবি চন্দ্রনাথ নির্মাণ করে। দর্পণায় ছবিটি ১৫ সপ্তাহ চলেছিল। দেখানো হয়েছিল প্রাচী, মেট্রো, ইন্দিরাতেও।
উল্লেখযোগ্য ছবি (১৯১৭-১৯৯৯)
পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট (১৯৫৯), গুপী বাঘা ফিরে এল (১৯৯২), কালপুরুষ (১৯৯৪), যোদ্ধা (১৯৯৭), কালরাত্রি (১৯৯৭)