ঠিকানা: ১০এ, মহাত্মা গান্ধী রোড, কলকাতা ৯
শুভারম্ভ: ১৯।৯।১৯৩১
প্রদর্শিত প্রথম ছবি: সহধর্মিণী
এখন: সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে (অভ্যন্তরীণ মেরামতির জন্য)
হেয়ার স্কুলের হেডমাস্টার মশাই ভোলানাথ পালের একটি ছাপাখানা ছিল। তাঁর পুত্র, সুরেশ পাল, শ্বাস নেওয়ার কোনরকম বাহ্যিক যন্ত্র ছাড়াই ইংলিশ চ্যানেল পার করার চেষ্টা করেন। ভোলানাথের নাতি ছিলেন হরিপ্রিয় পাল। লিন্ডসে স্ট্রিটে বেঙ্গল ফটোগ্রাফার্স নামে তাঁর একটি ছবি তোলার দোকান ছিল। দোকানটি তিনি তাঁর মাতামহীর কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত দোকানটি না চলায়, হরিপ্রিয় বিভিন্ন ধরণের ব্যবসায় সাফল্য লাভের চেষ্টা করতে থাকেন। এর মধ্যে ছিল খোলা আকাশের নিচে কিংবা তাবু খাটিয়ে সিনেমা দেখানোর ব্যবস্থাপনা। এখন যেখানে ছবিঘর প্রেক্ষাগৃহটি আছে, আগে সেখানেই তাবু খাটিয়ে সিনেমা দেখানো হত। শ্রীমানি পরিবারের অনুদানে, ১৯৩০- এর দশকে হরিপ্রিয় সেখানেই ছবিঘর প্রেক্ষাগৃহের জন্য একটি পাকা ইমারত তৈরি করেন। প্রথম থেকেই এই দ্বিতল প্রেক্ষাগৃহে দুটি লবি, একটি বারান্দা এবং রিয়ার স্টল ছিল। হরিপ্রিয়র আট কন্যা এবং এক পুত্র ছিল। তাঁর বড় মেয়েটির নাম ছিল ছবি এবং তার নামানুসরণেই প্রেক্ষাগৃহের নাম রাখেন হরিপ্রিয়। এই প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত প্রথম ছবিটি ছিল রূপম ফিল্ম কোম্পানি প্রযোজিত এবং অনুপম বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত 'সহধর্মিনী'। এই ছবিটি প্রথমবার দেখানো হয় ১৯৩১-সালের ১৯-শে সেপ্টেম্বর। সেই সময় হরিপ্রিয় নিজেও ফিল্ম প্রযোজনার সাথে যুক্ত হন এবং তাঁর প্রযোজনায় বেশ কিছু ছবি তৈরি হয় যেমন রাজা 'হরিশচন্দ্র', 'সাদা কালো' এবং 'দর্পচূর্ণ'। ছবি প্রযোজনা করা ছাড়াও মুর অ্যাভিনিউতে ১০-বিঘা জমির ওপরে একটি বিশাল স্টুডিও তৈরির পরিকল্পনা ছিল তাঁর। সেই স্টুডিও আর তৈরি করা হয়ে না উঠলেও তাঁর একক পর্দার প্রেক্ষাগৃহটি দারুণ ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করে। ছবিঘরে একসাথে ৬৭০-জন দর্শকের বসার ব্যবস্থা ছিল। ১৯৯৮-সালে হরিপ্রয় প্রয়াত হন। তাঁর পুত্র, সোমনাথ পাল, ১৯৭২-সাল থেকেই ব্যবসার কাজ দেখাশোনা করতে শুরু করেছিলেন। ভি. শান্তারামের পুত্রের সহযোগিতায় তিনিই প্রথম বাংলা সিনেমায় ফোর ট্র্যাকিং প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেন। তরুণ মজুমদারের 'পথ ও প্রসাদ' ছবির জন্য তিনি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিলেন। সংস্কারের মাধ্যমে ১৯৯১- সালে প্রেক্ষাগৃহটির আধুনিকীকরণ করা হয়। সুরঞ্জন পাল ২০০৮- সালে এই প্রেক্ষাগৃহে ইউএফও প্রোজেকশনের পাশাপাশি ফ্ল্যাট স্ক্রিন, টু কে প্রোজেকশন এবং ডলবি ডিজিটালের ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে, এই প্রেক্ষাগৃহের বারান্দা অংশে ১৪৪-টি এবং রিয়ার স্টলে ৫০২-টি আসন আছে। আজও কলকাতায় মিনার-বিজলী-ছবিঘরের জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ন রয়েছে। তিনটি প্রেক্ষাগৃহে একই সময়, একই ছবি দেখানো হয়।
পুনশ্চ
প্রমথেশ বড়ুয়া, কানন দেবী, ধীরাজ ভট্টাচার্য, কৃষ্ণচন্দ্র দে-রা এক সময় নিয়মিত আসতেন এই হলে।
উল্লেখযোগ্য ছবি (১৯১৭-১৯৯৯)
সহধর্মিণী, কলেজ গার্ল, গৌরীশঙ্কর, হরিশ্চন্দ্র, ভালোবাসা (ছোট), মায়া-মৃগ, বন্দী, বিচার, দাবী, দিকশূল, পোষ্যপুত্র, চাঁদের কলঙ্ক, সমাজ, সন্ধি, ভাবীকাল, বন্দিতা, কলঙ্কিনী, বন্দে মাতরম্, নিবেদিতা, প্রতিমা, শান্তি, অলকানন্দা, দেশের দাবী, ঘরোয়া, মন্দির, নৌকাডুবি, রাত্রি, ভাইবোন, বিচারক, জয়যাত্রা, কালো ছায়া, মনে ছিল আশা, নারীর রূপ, স্যার শঙ্করনাথ, উমার প্রেম, অনুরাধা, আশাবরী, চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন, নিরুদ্দেশ, রাঙামাটি, সন্দীপন পাঠশালা, স্বামী, অপবাদ, দিগভ্রান্ত, দ্বৈরথ, জিপ্সী মেয়ে, মানদণ্ড, সমর, সন্ধ্যাবেলার রূপকথা, অনুরাগ, ভৈরব মন্ত্র, ভক্ত রঘুনাথ, চীনের পুতুল, দর্পচূর্ণ, কূলহারা, রাজমোহনের বৌ, সম্পদ, সংকেত, সেতু, আলাদিন ও আশ্চর্য্য প্রদীপ, অমর ভূপালী (ডাব্ড), বাগদাদ, কা তব কান্তা, কবি চন্দ্রাবতী, কপালকুণ্ডলা, মধুরাতি, মানিকজোড়, পল্লীসমাজ, বৈমানিক, বিষবৃক্ষ, ব্লাইণ্ড লেন, বৌদির বোন, দুই বেয়াই, জালিয়াৎ, যোগ বিয়োগ, মহারাজ নন্দকুমার, মাকড়সার জাল, রাখী, রোশেনারা, সাত নম্বর কয়েদী, এটম্ বম্, ভাঙাগড়া, ছেলে কার !, হ্যাঁ, মরণের পরে, মনের ময়ূর, প্রফুল্ল, রিফিউজি, সাদা কালো, শুভযাত্রা, অর্দ্ধাঙ্গিনী, ছোট বউ, দেবী মালিনী, জয় মা কালী বোর্ডিং, জ্যোতিষী, পরেশ, সাজঘর, শ্রীবৎস-চিন্তা, উপহার, ছায়াসঙ্গিনী, হে মহামানব, কীর্ত্তিগড়, মহানিশা, মামলার ফল, মানরক্ষা, পরাধীন, পুত্রবধূ, সাবধান, শঙ্কর নারায়ণ ব্যাঙ্ক, শিল্পী, আঁধারে আলো, অভয়ের বিয়ে, অন্তরীক্ষ, Basantabahar, ছায়াপথ, জীবন তৃষ্ণা, খেলা ভাঙার খেলা, রাত একটা, রাস্তার ছেলে, শেষ পরিচয়, সিঁদুর, নাগিনী কন্যার কাহিনী, পুরীর মন্দির, রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত, শ্রীশ্রীমা, সূর্য্যতোরণ, স্বর্গ মর্ত্ত্য, আম্রপালী, বাড়ী থেকে পালিয়ে, দীপ জ্বেলে যাই, ইন্দ্রনাথ শ্রীকান্ত ও অন্নদাদি, ক্ষণিকের অতিথি, মরুতীর্থ হিংলাজ, দেবী, হসপিটাল, ক্ষুধিত পাষাণ, শুন বরনারী, আশায় বাঁধিনু ঘর, দুই ভাই, ঝিন্দের বন্দী, মধ্যরাতের তারা, সাথীহারা, আগুন, বিপাসা, দাদাঠাকুর, হাঁসুলী বাঁকের উপকথা, মায়ার সংসার, নির্জন সৈকতে, নিশীথে, ন্যায়দণ্ড, ত্রিধারা, আরোহী, জীবন কাহিনী, কালস্রোত, কাঞ্চনরঙ্গ, কিনু গোয়ালার গলি, প্রভাতের রঙ, অভয়া ও শ্রীকান্ত, আলোর পিপাসা, একটুকু বাসা, একটুকু ছোঁয়া লাগে, মুখুজ্যে পরিবার, সুরের আগুন, কাল তুমি আলেয়া, লব কুশ, মণিহার, পাড়ি, ছুটি, দুষ্টু প্রজাপতি, হাটেবাজারে, আপনজন, বাঘিনী, আরোগ্য নিকেতন, গুপী গাইন বাঘা বাইন, হার মানা হার, আঁধার পেরিয়ে, অশনি সংকেত, ননীগোপালের বিয়ে, স্ত্রীর পত্র, আলোর ঠিকানা, দেবীচৌঘুরাণী, ফুলেশ্বরী, ঠগিনী, ছুটির ফাঁদে, কবি, রাজা, রাণুর প্রথম ভাগ, সংসার সীমান্তে, দম্পতি, দুই বোন, হারমোনিয়াম, জন অরণ্য, আনন্দ আশ্রম, অসাধারণ, ভোলা ময়রা, একবিন্দু সুখ, জাল সন্ন্যাসী, যুক্তি তক্কো আর গপ্পো, তিন পরী ছয় প্রেমিক, আরাধনা (ডাব্ড), চারমূর্তি, গোলাপ বৌ, জটায়ু, বনবাসর, ব্রজবুলী, দৌড়, গণদেবতা, মাদার, বন্ধন, অবিচার, বন্দী বলাকা, দুর্গা দুর্গতি নাশিনী, কলঙ্কিনী, কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী, সৎমা, সুবর্ণলতা, আজ কাল পরশুর গল্প, অপরূপা, বন্দিনী কমলা, খেলার পুতুল, মেঘমুক্তি, মৌচোর, দীপার প্রেম, ভালবাসা ভালবাসা, হরিশশ্চন্দ্র -শৈব্যা, হুলস্থূল, বৌমা, লালমহল, পরিণতি, অর্পণ, দোলনচাঁপা, একান্ত আপন, প্রতিকার, আগুন, অন্তরঙ্গ, ছোট বউ, কিডন্যাপ, প্রতীক, আমার শপথ, অপরাহ্ণের আলো, বিদায়, নিশিবন্ধু, প্রণমি তোমায়, আপন আমার আপন, অভাগিনী, মহাপৃথিবী, রূপবান, সজনী গো সজনী, সিঁদূর, বন্ধু, মহাশয়, শ্বেত পাথরের থালা, অনুভব, প্রথমা, আব্বাজান, অজানা পথ, বাবা লোকনাথ, শেষ চিঠি, অন্তরতম, বেপরোয়া, ভাগ্য়দেবতা, দৃষ্টি, জীবন যোদ্ধা, কুমারী মা, মেজবউ, মোহিনী, নাগিনকন্য়া, বেয়াদপ, লাঠি, মুখ্য়মন্ত্রী, Naach Nagini Naach Re, প্রাণ সজনী, উনিশে এপ্রিল, দামু, লাল দরজা, সেদিন চৈত্রমাস, শ্রীমান ভূতনাথ, আমার মা, আজব গাঁয়ের আজব কথা, দহন, দাহ, হঠাৎ বৃষ্টি, জীবনতৃষ্ণা, নয়নের আলো, সূর্যকন্য়া