ঠিকানা: ৪এ, চৌরঙ্গী প্লেস। কলকাতা ১৩
শুভারম্ভ: ১৯০৮
প্রদর্শিত প্রথম ছবি: কিসমত (রক্সি)
এখন: বন্ধ
আগের নাম : এম্পায়ার থিয়েটার
রক্সি সিনেমা হলের পুরনো নাম ছিল এম্পায়ার থিয়েটার। ১৯০৮ সালে আরাথুন স্টিফেনের সাথে অংশীদারিত্বে গ্লোবাল থিয়েটার কোম্পানি কর্ণধার মরিস ব্যান্ডম্যান এটি নির্মাণ করেন। ব্যান্ডম্যানের মিশরে থিয়েটার ছিল এবং জিব্রাল্টারেও এম্পায়ার থিয়েটারের শাখা ছিল। আর আরাথুন স্টিফেন তো বিখ্যাত হয়েই আছেন গ্র্যান্ড হোটেলের নির্মাতা হিসেবে। ব্যান্ডম্যানের সৌজন্যেই ১৯১১-১২ সালে কলকাতায় বহু আন্তর্জাতিক থিয়েটার তারকাদের আগমন ঘটে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানেই ১৯১৯ সালের মার্চ মাসে তাঁর বিখ্যাত ‘ভারতীয় সংস্কৃতির কেন্দ্র’ নামক বক্তৃতাটি দেন। ১৯২৩ সালে এখানেই তিনি বিসর্জন নাটকে জয়সিংহের ভূমিকায় অভিনয় করেন। ১৯২৯ সালে তাঁর তপতী নাটকের প্রথম অভিনয়ও এখানে। ১৯৩৩-এ বিশ্বভারতীর দল লখনউ সফর থেকে ফিরে এখানেই শাপমোচন অভিনয় করেছিল। ১৯৩৯ সালে রমেশ কাপুরচাঁদ মেহতা এবং ব্রজলাল মেহতা পরিচালিত বেঙ্গল প্রপার্টিজ এম্পায়ার থিয়েটারের দায়িত্ব নেয়। তারাই এটিকে তিনটি তলা, সংলগ্ন পানশালা এবং ৭৩৬ আসনবিশিষ্ট একটি সিনেমা হলে রূপান্তরিত করে এবং বম্বেতে তাদের রক্সি সিনেমার নামানুসারে এটির নামকরণ করে রক্সি। মেহতারা নবকেতন ফিল্মস এবং আরকে স্টুডিও সহ অনেক হিন্দি প্রযোজনা সংস্থাকে টাকা দিত। রমেশ ছিলেন কলকাতায়। তিনি রক্সি এবং পরবর্তী কালে প্যারাডাইস পরিচালনায় জড়িত ছিলেন। এম্পায়ার থিয়েটার রক্সি হওয়ার পরে প্রথম দেখানো হয় অশোক কুমারের নয়া সংসার (১৯৪১)। এটি ১৭ সপ্তাহ চলেছিল। বাসন্তী (১৯৪২) চলেছিল ৫০ সপ্তাহ, আরও বেশি চলেছিল কিসমত (১৯৪৩)। বিশ্বযুদ্ধের বাজারে সেনাবাহিনী রক্সিতে তাদের ব্যারাক করেছিল। যুদ্ধ শেষ হলে ফের পর্দা ওঠে। সাজন (১৯৪৫) ১৬ সপ্তাহ, শবনম (১৯৪৯) ২০ সপ্তাহ, মহল (১৯৫০) ১৬ সপ্তাহ, ভাবী (১৯৫৮) ৫৪ সপ্তাহ, জংলি (১৯৬২) ৫১ সপ্তাহ, খানদান (১৯৬৫) ২৫ সপ্তাহ, অনুরোধ (১৯৭৭) ২২ সপ্তাহ, জান তেরে নাম (১৯৯২) ২৩ সপ্তাহ, মাচিস (১৯৯৬) ১৬ সপ্তাহ ধরে চলেছিল। দর্শকরা অনেকে দিনে চারটি শো-ও দেখত। লোক প্রায়শই টিকিট নিয়ে ঝগড়া করত এবং কেন ব্ল্যাক হচ্ছে বলে ঝাঁপিয়ে পড়ত। পুরসভা থেকে বেঙ্গল প্রপার্টিজের ইজারার মেয়াদ ২০০৬ সালে শেষ হয়। ২০০৯ সালে দু’পক্ষ মামলায় জড়িয়ে পড়ে। ২০১৬ সালে, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বেঙ্গল প্রপার্টিজের বিরুদ্ধে রায় দেয়। ভূমি অধিগ্রহণ দফতর তার ভিত্তিতে উচ্ছেদের মামলা করে। উচ্ছেদের নির্দেশ আসে ৬ মার্চ, ২০২০৷ বেঙ্গল প্রপার্টিজ আর লড়াই চালায়নি। এমনিতেই হলে লোক কমছিল। ২০১০ থেকেই কমানো হয়েছিল শো। এখানে দেখানো শেষ ছবি ছিল, ভূত পার্ট ওয়ান: দ্য হন্টেড শিপ। সেদিন সন্ধ্যা ৬টার শোতে মাত্র ২৭ জন উপস্থিত ছিলেন। ২০২১ সালে এখানে কোভিড টিকাকেন্দ্র খোলা হয়।
পুনশ্চ
আইএনএ যুদ্ধবন্দিদের বিচারের খরচ তোলার জন্য ১৯৪৬ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কাউন্সিল ব্যাঙ্কের তরফে রক্সিতে একটি অনুদান সংগ্রহ অনুষ্ঠান হয়। অ্যাসোসিয়েট ডিস্ট্রিবিউটার্সের তরফে মিনার-বিজলী-ছবিঘর কর্তৃপক্ষ ৫০০১ টাকা তুলে দেন।
উল্লেখযোগ্য ছবি (১৯১৭-১৯৯৯)
স্বামিজী